আজ কত রোজা? আজকের রোজার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৪
বছর ঘুরে মহিমান্বিত রমজান মাস আবারও এসেছে আমাদের মাঝে। এই মাহে রমজানে রোজা রাখা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ করা হয়েছে। এছাড়াও সাওম বা রোযা হলো ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ।
রমজান মাসে সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি জেনে নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারন প্রতিদিন ইফতার ও সেহরির সময় পরিবর্তিত হয়। তাই আপানাকে প্রথমে জেনে নিতে হবে আজ কত রোজা?
আজ কত রোজা?
১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন রমজানের সময়সূচী ২০২৪ প্রকাশ করেছে। এ বারের রোজার ক্যালেন্ডার ২০২৪ অনুযায়ী ১১ই মার্চ রাতে ১ম সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রমজান মাস শুরু হয়েছে।
তাহলে ১২ ই মার্চ ১ম রোজা হয়েছে। তাই আমরা যদি সেদিন থেকে আজকের তারিখ হিসেব করি তাহলে খুব সহজেই আজ কততম রোজা জানতে পারব। আর আপনি যদি হিসেব করতে না চান, তাহলে নিচের রমজানের ক্যালেন্ডার থেকে দেখে নিন আজকে কত রমজান?
নিচে সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি সম্বলিত ২০২৪ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার থেকে আজকের ইংরেজি তারিখ অনুযায়ী খুব সহজেই আজকে রমজানের কত তারিখ মিলিয়ে নিতে পারবেন।
আজকে কত রমজান?
অনেকেই রমজান মাস শুরু হওয়ার পর রোজার হিসেব রাখতে পারে না। তাই তারা প্রায়শই জিজ্ঞেস করেন আজকে কততম রোজা অথবা আজকে কত রমজান? কেননা অনেকেই রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের হিসেব রাখতে চায়। আবার অনেকেই এই অনুযায়ী আমল করে থাকেন।
আপনি হয়ত জানেন যে, রমজানের ১ম ১০ দিন রহমত, পরবর্তী ১০ দিন মাগফেরাত এবং শেষ ১০ দিন নাজাতের দিন হিসেবে ধরা হয়। আজকের রোজার দিন যে ভাগে পরুক না কেন, রমজানের প্রত্যেক দিন মুমিনদের জন্য বরকতময়। এ বিষয়ে হযরত মুহম্মদ (স) বলেন:
“রোজাদারের জন্য প্রতিদিন জান্নাতকে সজ্জিত করা হয়“
– আল হাদিস
নিচের ছক হতে আজ কত রোজা জেনে নিন।
আরো জানুনঃ
ঢাকা জেলার আজকের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচী ২০২৪
চট্টগ্রাম জেলার আজকের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচী ২০২৪
আজকের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি
দেশের বিভিন্ন স্থানে সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি তে পার্থক্য থাকে। নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনে আমাদের সেহরি ও ইফতার করতে হয়। নাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবার সম্ভাবনা থাকে। তাই সেহরি ও ইফতারের সময়সূচী ২০২৪ সঠিকভাবে জেনে নেওয়া উচিৎ। নিম্নবর্ণিত ছক অনুযায়ী আপনার এলাকা ভিত্তিক সময় যোগ বা বিয়োগ করে নিতে হবে।
প্রতি বছরই রোজার সময়সূচি পরিবর্তিত হয়। এই পোস্ট থেকে সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৪ সহজেই জেনে নিতে পারবেন। প্রতিটি এলাকার জন্য সাহরী ও ইফতারের সময়সূচি আলাদা। তাই নিচের ছক থেকে আজকের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিন।
দেশের বিভিন্ন জেলার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি
নিচের ছক হতে আপনার শহরের নামে ক্লিক করে দেখে নিন আপনার শহরের জন্য আজকের ইফতার ও সেহরির সময়সূচীঃ
সিলেট | চট্টগ্রাম |
কুমিল্লা | খুলনা |
যশোর | রাজশাহী |
রংপুর | ময়মনসিংহ |
বরিশাল | ঢাকা |
রোজার মাসআলা মাসায়েল
কিছু বিষয় নিয়ে অনেক রোজাদারের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা যায়। তাই অনেকের মধ্যে রোজার মাসআলা মাসায়েল নিয়ে কৌতূহল কাজ করে।
এখানে রমজানের মাসলা মাসায়েল আলোচনা করা হল। আপনি নিচের ছক হতে রোজার মাসআলা মাসায়েল pdf download করতে পারেন।
রোজার নিয়ত:
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
বাংলায় উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আছুমা গদাম মিন শাহরি রমাদ্বানাল মুবারকি ফারদ্বল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাক্বব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আংতাস সামীউল আলীম।
অর্থ: আয় আল্লাহ তায়ালা! আপনার সন্তুষ্টির জন্য আগামীকালের রমাদ্বান শরীফ-এর ফরয রোযা রাখার নিয়ত করছি। আমার তরফ থেকে আপনি তা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা , সর্বজ্ঞাত।
রোজার নিয়ত না করলে কি রোজা হবে?
রোজা রাখার জন্য রোজার নিয়ত করা জরুরি। কেউ যদি রোজার নিয়ত করতে ভুলে যান। তাহলে তাকে দ্বিপ্রহর এর আগে নিয়ত করে নিতে হবে।
এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাসয়ালা হলো:
মাসআলা: কেউ যদি ছুবহি ছাদিক্বের পূর্বে নিয়ত না করে তাহলে তাকে দ্বিপ্রহরের পূর্বে নিয়ত করতে হবে। তখন এভাবে নিয়ত করবে:
বাংলায় উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আছুমাল ইয়াওমা মিন শাহরি রমাদ্বানাল মুবারকি ফারদ্বাল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফা তাক্বাব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আংতাস সামীউল আলীম।
রোজার নিয়ত করা কি ফরজ?
হ্যা। রোজার নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত না করলে কোনো রোজা হবে না, হোক সেটা রমজানের ফরজ রোজা অথবা নফল রোজা। অন্তরের দৃঢ় সংকল্পকে নিয়ত বলা হয়। নিয়ত মুখে বলা জরুরি না। এ সম্পর্কে আল্লামা শামি (রহ.) লিখেছেন, ‘আভিধানিক সূত্রে নিয়ত হলো ‘আজম’ আর আজম বলা হয়- মনের দৃঢ় সংকল্পকে। ’ -ফাতাওয়ায়ে শামি : ২/৯০
নিয়ত হল ইবাদতের “রোকন” তথা শর্ত। ইবাদতের সওয়াব প্রাপ্তি পুরোপুরি নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। হাদিস শরিফে আছে, ‘সকল আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। ’ -সহিহ বুখারি
নিয়তের ক্ষেত্রে সাধারণত আমরা দুই ধরনের ভুল করে থাকি।
যেমন-
১. কেউ কেউ নিয়তের শব্দগুলো শুধু মুখে উচ্চারণ করেন কিন্তু অন্তরে সংকল্প করেন না।
২. আবার অনেকে নিয়তের শব্দগুলো মুখেও উচ্চারণ করেন না আর অন্তরেও কোনো সংকল্প করেন না। তার মানে রোজার নিয়ত করা ফরজ হওয়ার কথা তিনি জানেনই না।
উপরোক্ত দুই শ্রেণির কোন ব্যক্তির রোজাই হবে না। এ সম্পর্কে আদ্দুররুল মুখতার প্রণেতা বলেন- ‘নিয়তের ক্ষেত্রে অন্তরের সুদৃঢ় সংকল্পই গ্রহণযোগ্য। কাজেই রোজার নিয়ত শুধু মুখের উচ্চারণ কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, যদি তা অন্তরের সংকল্পের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না হয়। কেননা, শুধু মুখের উচ্চারণকে কথা বলা হয়; নিয়ত বলা হয় না। ’ –আদ-দুররুল মুখতার: ২/৯১
মাসয়ালা : রোজার নিয়ত মনে মনে করাই যথেষ্ট। তবে ‘নাওয়াইতু বি সাউমি গাদিম মিন শাহরি রামাজান’ মুখে উচ্চারণ করার মাধ্যমে নিয়ত করা উত্তম। -বেহেশতি জেওর: ৩/৩
ইফতারের দোয়া:
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ وَ عَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ
বাংলায় উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সুমতু লাকা, ওয়া তাওআক্কালতু আ‘লা রিঝক্বিকা, ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন
অর্থ: আয় আল্লাহ তায়ালা! আমি একমাত্র আপনারই সন্তুষ্টির জন্য রোযা রেখেছি এবং আপনারই দেয়া রিযিক দ্বারা ইফতার করছি।
আরো জানুনঃ