দেখুন বাংলা বর্ষপঞ্জি ২০২৪ | বাংলা সন ক্যালেন্ডার মাস সহ 2024
বাংলা বর্ষপঞ্জি বা বাংলা ক্যালেন্ডার হলো ভারতীয় উপমহাদেশের বঙ্গ অঞ্চলে (বাংলাদেশ ও ভারতের বেশ কিছু অঞ্চল) ব্যবহৃত একটি সৌর বর্ষপঞ্জি। বর্তমানে ব্যবহৃত বাংলা বর্ষপঞ্জিটি পুরোনো ৫৩৯/৫৪০ খ্রিস্টাব্দে ব্যবহৃত বর্ষপঞ্জিটির একটি সংশোধিত সংস্করণ। এখন এটি বাংলাদেশের জাতীয় ও সরকারি বর্ষপঞ্জি হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্যে বর্ষপঞ্জিটির পূর্ববর্তী সংস্করণ অনুসরণ করা হয়।
বাংলা ক্যালেন্ডার ২০২৪ । বাংলা বর্ষপঞ্জি ১৪৩০
বাংলা ক্যালেন্ডার একটি চন্দ্র-ভিত্তিক ক্যালেন্ডার যা বাংলাদেশ ও ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে প্রচলিত আছে। বাংলা বর্ষপঞ্জির ১২ মাস বিভিন্ন উত্সব, প্রাকৃতিক রুপ সৌন্দর্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে পরিপূর্ণ । এখানে বাংলা ক্যালেন্ডার ও ১২ মাসের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব, এবং বাংলা কোন মাসে কোন ঋতু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছেঃ
বাংলা বর্ষপঞ্জি ও বাংলা মাস| কোন মাস কত দিনে?
বাংলা বর্ষপঞ্জিতে ১২ মাস রয়েছে। প্রতিটি মাস নিজস্ব ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক উৎসব এবং প্রকৃতির রূপ বৈচিত্র নিয়ে বাঙালিদের কাছে সমাদরীয় হয়ে আছে। বাংলা মাসগুলো পালাক্রম অনুযায়ী একটার পর আরেকটা হাজির হয়। নিচে বাংলা ক্যালেন্ডার ১৪৩০ হতে বাংলা ১২ মাসের নাম তুলে ধরা হলঃ
- বৈশাখ
- জ্যৈষ্ঠ
- আষাঢ়
- শ্রাবণ
- ভাদ্র
- আশ্বিন
- কার্তিক
- অগ্রহায়ণ
- পৌষ
- মাঘ
- ফাল্গুন এবং
- চৈত্র
বৈশাখ থেকে আশ্বিন— এই ছয় মাস ৩১ দিন গণনা করা হবে।
কার্তিক থেকে মাঘ এবং চৈত্র— এই পাঁচ মাস ৩০ দিন গণনা করা হবে।
ফাল্গুন মাস ২৯ দিনে গণনা করা হবে।
ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রতি চার বছর অন্তর ফাল্গুন মাসে বঙ্গাব্দের অধিবর্ষ হবে অর্থাৎ যে খ্রিষ্টাব্দে লিপ ইয়ার হবে সেই বাংলা বছরের বাংলা ক্যালেন্ডারে ফাল্গুন মাস ৩০ দিনে গণনা করা হবে।
বাংলাদেশে শামসুজ্জামান খান কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে সরকারি বর্ষপঞ্জি তৈরি করা হয়। বর্তমানে সরকারিভাবে এই বর্ষপঞ্জিই চালু আছে।
বৈশাখ মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৩০
বৈশাখ – বৈশাখ বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস। এটি সাধারণত এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে পড়ে।
বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ উৎযাপনের মাধ্যমে সবাই নতুন বছর শুরু করে। এ দিনে সকল বাঙালী নতুন পোশাক পরে, ঐতিহ্যবাহী খাবার খায়, সঙ্গীত ও নাচ এবং শোভাযাত্রা ও ৱ্যালির সাথে উদযাপন করে।
জৈষ্ঠ – জৈষ্ঠ বাংলা ক্যালেন্ডারের দ্বিতীয় মাস এবং মে মাসের শেষের দিকে বা জুনের শুরুতে পড়ে। এই মাসে তাপমাত্রা অনেক বেশি হয় আর মানুষ একটু প্রশান্তির জন্য বৃষ্টিপাতের আশা করে। এছাড়াও জৈষ্ঠ মাসে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল পাওয়া যায়।
আষাঢ় – আষাঢ় বাংলা ক্যালেন্ডারের তৃতীয় মাস আর আষাঢ় মাস বর্ষাকালের প্রথম মাস যা জুনের শেষের দিকে বা জুলাইয়ের শুরুতে পড়ে। এটি বৃষ্টির মাস এবং কৃষকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস হিসাবে বিবেচিত হয় কারণ তারা রোপণের মৌসুমের জন্য প্রস্তুতি নেয়।
শ্রাবণ – শ্রাবণ বাংলা ক্যালেন্ডারের চতুর্থ মাস এবং জুলাইয়ের শেষের দিকে বা আগস্টের শুরুতে পড়ে। এটি বাঙালিদের বিভিন্ন উৎসব ও উদযাপনের মাস, যার মধ্যে রয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের রক্ষা বন্ধন, এবং মুসলমানের ঈদ-উল-ফিতর।
ভাদ্র -ইংরেজি ক্যালেন্ডারে আগস্টের শেষের দিকে বা সেপ্টেম্বরের শুরুতে পড়ে বাংলা ক্যালেন্ডারের পঞ্চম মাস ভাদ্র। এটি ফসল কাটার মাস এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গা পূজা এ মাসে পালন করা হয়।
আশ্বিন – বাংলা ক্যালেন্ডারের ষষ্ঠ মাস আশ্বিন শুরু হয় সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বা অক্টোবরের শুরুতে। এটি দীপাবলির বাঙালি হিন্দু উৎসবের মাস এবং এটি দেবী লক্ষ্মীর পূজার সাথে জড়িত।
কার্তিক – ইংরেজি ক্যালেন্ডারের অক্টোবরের শেষের দিকে শুরু হয় বাংলা ক্যালেন্ডারের সপ্তম মাস কার্তিক। এটি বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবের মাস কালী পূজার মাস, যা দেবী কালীকে উৎসর্গ করা হয়।
অগ্রহায়ণ – বাংলা ক্যালেন্ডারের অষ্টম মাস অগ্রহায়ণ যা ইংরেজি ক্যালেন্ডারে নভেম্বরের শেষের দিকে বা ডিসেম্বরের শুরুতে পড়ে। এ মাস বাঙালি মুসলমানদের মহরমের উত্সব আর হিন্দু সম্প্রদায়ের জগদ্ধাত্রী পূজার সাথে জড়িত।
পৌষ – বাংলা ক্যালেন্ডারের নবম মাস পৌষ যা ডিসেম্বরের শেষের দিকে শুরু হয় । এই মাসে বাংলাদেশে সাধারণত শীতকালের শুরু হয়। এটি মকর সংক্রান্তির বাঙালি হিন্দু উৎসবের সাথে যুক্ত, যা শীতকালীন অয়নকালের সমাপ্তি চিহ্নিত করে।
মাঘ – মাঘ হল বাংলা ক্যালেন্ডারের দশম মাস যা ইংরেজি ক্যালেন্ডারে জানুয়ারির শেষের দিকে শুরু হয়। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে শীতলতম মাস এবং শীতকালের শেষ সময়।
ফাল্গুন – ফাল্গুন বাংলা ক্যালেন্ডারের একাদশ মাস এবং ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে বা মার্চের শুরুতে পড়ে। এ মাসে চারিদিকে বিভিন্ন ফুল ও গাছ-পালার ডালে ডালে সবুজ পাতার বহর দেখা যায়। এটি বাঙালি হিন্দু উৎসব হোলির সঙ্গে যুক্ত, যা বাংলায় দোল যাত্রা নামে পরিচিত।
চৈত্র – চৈত্র বাংলা ক্যালেন্ডারের দ্বাদশ এবং শেষ মাস এবং মার্চের শেষের দিকে বা এপ্রিলের শুরুতে পড়ে। এ মাসে বাংলাদেশের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে এবং চারিদিকে প্রকৃতি রুক্ষ হয়ে উঠে।